Ratargul The Amazon Of Bangladesh
রাতারগুল (Ratargul) বাংলাদেশের একমাত্র সােয়াম্প ফরেস্ট বা জলাবন । প্রাচীন জৈন্তা রাজ্যের অন্তর্গত রাতারগুল (Ratargul)। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রশাসনিক উপজেলা গােয়াইনঘাটের রুস্তমপুর ইউনিয়নের অধীনে রাতারগুল অবস্থিত।
রাতারগুল (Ratargul) মিনি সুন্দরবন:
মিনি সুন্দরবন হিসাবে রাতারগুল ভ্রমণপিয়াসী মানুষের প্রিয় হয়ে উঠেছে দিন দিন ধরে। এখানে পানির মধ্যে লক্ষ লক্ষ গাছের বাহার। সাপ-বিচ্ছু থেকে শুরু করে সবই আছে এখানে।
নিচে পানি উপরে গাছ। নৌকা করে রাতারগুল (Ratargul) ঘুরে বেড়ানো তো হয়ে উঠতে পারে দারুণ এক অ্যাডভেঞ্চার। দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা তাই অ্যাডভেঞ্চার জগতে ছুটে আসে বছরের যেকোন সময় । জলে দাঁড়িয়ে থাকা বৃক্ষদের দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমান ভরা বর্ষা মৌসুমে। বনময় ঘুরে বেড়ানো যায় নৌকায় চড়ে। ডিঙিতে চড়ে বনের ভেতর ঘুরতে ঘুরতে দেখতে পাবেন দেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট। জলমগ্ন এই বনে সাপের আবাসটাই বেশি। বানর থাকলেও কম। তবে সাদা বক, কানা বক, মাছরাঙা, টিয়া, বুলবুলি, পানকৌড়ি, ঘুঘু, চিলসহ নানা জাতের পাখি দেখতে পাবেন।
বাংলাদেশ বনবিভাগের অধীনে এই বনটি সংরক্ষিত আছে । গোয়াইন নদীর তীরবর্তী রাতারগুল (Ratargul), চেঙ্গিস খালের সাথে এসে মিছেছে । বছরের প্রতিটি মাসই রাতারগুল বেড়ানোর সময় এবং পর্যটিকের কাছে আকর্ষনীয় । বৃষ্টির মৌসুমে ২০-৩২ ফুট পানি থেকে , এবং বছরের অন্যান্য সময় ১০ ফুটের থেকে একটু বেশি । করচ নামে একজাতীয় বনজ গাছ খুব বেশি হারে রাত্রগুলে আছে । শীত কালে যখন অথৈ জ্বল শুকিয়ে যায় তখন রাতারগুল (Ratargul) এ ডুবে থাকা ছোট ছোট খাল গুলি পায়ে হাঁটার রাস্তায় পরিনত হয় ।
বাংলার আমাজন
অনেকে একে বাংলাদেশের আমাজনও বলে থাকেন। এখানে গাছের ডালে ডালে ঘুরে বেড়ায় নানান বন্য প্রাণী আর পাখি। শীতে জল শুকিয়ে যায় বলে বর্ষা এবং বর্ষাপরবর্তী সময় (জুলাই থেকে অক্টোবর) রাতারগুল ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। সিলেট শহর থেকে রাতারগুল (Ratargul) এর দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় এ বনের অবস্থান। সিলেট বন বিভাগের উত্তর সিলেট রেঞ্জে-২ এর অধীন প্রায় ৩০ হাজার ৩শ ’ ২৫ একর জায়গা জুড়ে এ জলাভূমি। এর মধ্যে ৫শ ’ ৪ একর জায়গার মধ্যে বন, বাকি জায়গা জলাশয় আর সামান্য কিছু উঁচু জায়গা। তবে বর্ষাকালে পুরো এলাকাটিই পানিতে ডুবে থাকে। শীতে প্রায় শুকিয়ে যায় রাতারগুল। তখন বনের ভেতরে খনন করা বড় জলাশয়গুলোতে শুধু পানি থাকে।
কিভাবে যাবেন রাতারগুল:
এ পর্যটন এলাকায় সিলেট শহর থেকে গাড়ী ভাড়া করে যেতে হবে। যাওয়ার জন্য দুটি রাস্তা ব্যবহার করা যাবে। একটি হলাে তামাবিল রােড দিয়ে শাহপরান-জালালাবাদ ক্যান্টনম্যান্ট-চিকনাগুল অতক্রম করে হরিপুর স্টেশনের পূর্বে হাতের বামদিকে ফতেহপুর-এয়ারপাের্ট রােড হয়ে রাতারগুল (Ratargul)। যাওয়া যায়। এটি মােটামােটি সহজ রাস্তা। অন্যটি হল সিলেট শহরের জিরাে পয়েন্ট থেকে আম্বরখানা হয়ে বিছানা কান্দি যাওয়ার পূর্বে হাতের ডানদিকের রাস্তা দিয়ে যাওয়া যাবে। যে কোন পর্যটক আমাদের এ মিনি সুন্দরবন ও দেশের মধ্যে একমাত্র সােয়াম্পফরেস্টটি দেখে যেতে পারেন আপনার ভ্রমণ। পিপাসু মনকে খােরাক দেয়ার জন্য।