খাসিয়া (Khasia) এবং খাসিয়া পুঞ্জি:
বাংলাদেশে বসবাসরত একটি মাতৃপ্রধান নৃগোষ্ঠি হলো খাসিয়া। মঙ্গোলীয় বংশোদ্ভূত খাসিয়া (Khasia) জাতি । এদের শারীরিক রঙ হরিদ্রাভ, নাক-মুখ পাতলা গড়নের চেপ্টা, চোয়াল উঁচু, চোখ কালো অথবা বাদামী , এবং ছোট টানা এবং খর্বকায়।
খাসিয়া জাতি প্রায় পাঁচ শত বছর আগে আসাম রাজ্য থেকে বাংলাদেশে আসে। কথিত আছে তারা আসাম রাজ্যে সম্ভবত তিববত থেকে এসেছিলো । এক সময় এ উপজাতিরা যাযাবর এর মতো বাস করতো। সাম্প্রতিক কালেও এ স্বভাবটা অনেকের ক্ষেত্রে লক্ষনীয় ।
Khasia-বসবাস অঞ্চল ও ভাষাঃ
খাসিয়াদের প্রধান আবাসস্থল হলো ভারতে উত্তর-পূর্ব অংশে । কিন্তু পাহাড়ী খাসিয়ারা পশ্চিমে গারো পাহাড় পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে বাস করে । জৈন্তিয়াপুরে খাসিয়া-জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে নেমে এসেছিল। এবং চেরাপুঞ্জি ও শিলং এ দুটি খাসিয়া অঞ্চলে তাদের বসবাস স্থল করে তুলে।
কানাইঘাট উপজেলায় ডােনা এলাকায় নকশিয়াপুঞ্জি, প্রতাবপুর, লামাপুঞ্জি সগ্রামপুঞ্জি এবং জৈন্তাপুর উপজেলার সদরে অর্থাৎ নিজপাট ও মােকামপুঞ্জি ঘিরে এদের বসবাস। খাসিয়াদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে। নিজেদের মধ্যে কথা বলার সময়। তারা খাসি ভাষা ব্যবহার করেন।
খাসিয়াদের জীবন-জীবিকা ও সস্কৃতিঃ
খাসিয়া (Khasia)রা পাহাড়ী জাতী বলে পাহাড়, টিলা, ঝোপজঙ্গল এদের খুবই পছন্দনীয় পরিবেশ বা আবাসস্থল। অত্যন্ত কারুকাজের সহিত কাঠ অথবা বাঁশ দিয়ে মঞ্চ তৈরী করে, এবং তার উপর বারান্দা অথবা বেলকনি দিয়ে, উপরে উঠার সিড়ি দিয়ে খাসিয়া (Khasia)রা কুঁড়েঘর বানায়।
অত্যন্ত সুন্দর আর আকর্ষনীয় মাচার উপরে কুড়ে ঘর সবারই মন কাড়ে। অতিথী অভ্যর্থনায় মাচার উপর থেকে অথবা সিড়ির শেষ অংশে হাত জোড় করে স্বাগত জানানো টা মনে হয় যেন রাজবংশীয় চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। খাসিয়া (Khasia) দের ঘরের বারান্দাই বৈঠক ঘর হিসেবে ব্যবহার হয়।
তারা খুবই সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করে। তাদের বাড়ীঘর খুবই পরিচ্ছন্ন, দেখলে মনজুড়ায়। তাঁদের বিভিন্ন গােত্র রয়েছে। সেগুলাে হল-সিনতেং বা সিংটাং, গাংছুই, বারভুই ও লিনগ্যাম প্রভৃতি। তারা প্রতিটি গ্রামের জন্য একজন গ্রাম প্রধান নির্বাচন করেন, যাকে তারা মন্ত্রী বলে থাকেন। এ মন্ত্রী বিভিন্ন বিচার-আচার, সামাজিক কার্যাবলী পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তাদের মধ্যে অহংকারের মাত্রা কম, ঝগড়াঝাটিও কম করে, হিংসা বিদ্বেষও কম। তারা আমাদের মতই সকল ধরনের বাঙালী খাদ্য খায়। যেমন- ভাত, মাছ, শাকসবজি। বস্ত্র পরিধানে তাদের মধ্যে বৈচিত্র লক্ষ্য করা যায়। পুরুষেরা পকেট ছাড়া জামা পরেন ও ধুতি পরেন এবং মহিলারা পিনা অর্থাৎ থাসেম ও থাতগিছা নামে এক ধরনের কাপড় পরিধান করে।
তাদের প্রধান পেশা বা জাতিগত পেশা হল জুম চাষ। তাদের উৎসব বা আনন্দদায়ক অনুষ্ঠানের নাম ‘হকতই। তাদের ঘরবাড়ীর ডিজাইন নতুন দেখা যে কোন পর্যটককে আকর্ষণ করবে নিঃসন্দেহে। তারা বর্তমানে লেখাপড়ায়। অনেক অগ্রগামী এবং অনেকেই চাকরীতে যােগদান করছে।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় খাসিয়া (Khasia)
বর্তমানে খাসিরা আবার বাঙালিদের মতো আধুনিকতার ছোঁয়ায় ঘর বাড়ি নির্মান করতেছে । লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বাঙ্গালীদের মতাে কাপড় পরিধানেও তারা অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। জৈন্তিয়া-খাসিয়া (Khasia)রা অপূর্ব সুন্দর করে বাংলো স্টাইলে বসত বাড়ি নির্মান করেছে, যা জৈন্তিয়া খাসিয়া (Khasia)-হাটিতে বেড়াতে গেলে চোখে পড়ে। উল্লেখ্য জৈন্তিয়া পুরে প্রাচীন জৈন্তিয়া রাজার বংশীয় কয়েক ঘর আছে যারা আজও রাজকীয় ভাবে জীবন জাপনের চেষ্টা করে। জৈন্তাপুর উপজেলা সদর বিভিন্ন হাটি বা পাড়ায় বিভক্ত, এর হাটিগুলুর মধ্যে একটির হাটির নামই “খাসিয়া (Khasia)-হাটি”।
খাসিয়ারা সাধারনত গ্রামকে পুঞ্জি বলে থাকে। অন্যান্য সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন, স্বীয় সীমানায় ও সাংস্কৃতিক বলয়ে গ্রামগুলি পুঞ্জীভূত। জীবিকার তাগিদে দলেবলে স্থান ত্যাগ করে এরা নতুন পুঞ্জি রচনা করে।
Summary
Khasia (or Khasi) is a matriarchal community living in Bangladesh. They are of Mongolian descent. They have greenish eyes, flattened nose and mouth, jaw high, eyes black and short drawn and itchy.
The Khasis came to Bangladesh from Assam more than five hundred years ago. They came to Assam probably from Tibet. At one time, these tribes were travelling. Their attitude is noticeable in recent times. Their main residence is northeast India. However, the Khasiyyas inhabited the hills extending west to the Garo Hills.
They came down from the Khasia-Jaintia hills to the Cherrapunji and Shillong Khasia regions. Mountains, hills and shrubs are their preferred environment. They build litter with balcony on wooden or bamboo stage. The porch is used as a living room. He also built houses like the modern Bengalis. The kitchen is adjacent to the living room and there is a raised pig’s yard nearby.